মিজানুর রহমান টনি: কেউ ভুল করলে তা সুন্দর ভাষায় শুধরে দেওয়া সওয়াবের কাজ। তবে তা অত্যন্ত বিনম্রতার সঙ্গে করতে হবে। কারণ সুন্দর আচার-ব্যবহার মানুষের অন্তরে গভীর রেখাপাত করে। রাসুল (সা.) বিভিন্ন সময় সাহাবিদের ভুল শুধরে দিয়েছেন।
বিভিন্ন হাদিসে সাহাবিরা তা গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছেন। এমন কয়েকটি ঘটনা নিম্নে তুলে ধরা হলো।
মুআবিয়া ইবনে হাকাম সুলামি (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে নামাজ পড়ছিলাম। এ সময় একজন হাঁচি দিলে আমি ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলি।
তখন উপস্থিত সবাই আমার ওপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। আমি বললাম, আমার মা সন্তানহারা হোক, তোমরা আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছ কেন? তখন তারা নিজেদের হাত দিয়ে ঊরুতে আঘাত করতে থাকে। আমি দেখলাম, তারা আমাকে চুপ করাতে চাচ্ছে। তাই আমি চুপ হয়ে গেলাম।
রাসুল (সা.) নামাজ সম্পন্ন করেন। আমার বাবা-মায়ের প্রাণ তাঁর জন্য কোরবান হোক। আমি তাঁর আগে ও পরে তাঁর চেয়ে উত্তম শিক্ষাদানকারী কোনো শিক্ষক দেখিনি। আল্লাহর শপথ, তিনি আমাকে তিরস্কার করলেন না। আমাকে মারধর করলেন না।
আমাকে গালাগালও করলেন না। তিনি বললেন, ‘নামাজে মানুষের কথা বলা উচিত নয়। নামাজ হলো তাসবিহ, তাকবির ও কোরআন পাঠ।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৩৭)
অন্য হাদিসে ভুলকারী ব্যক্তিকে দোষারোপ না করে উত্তম পন্থায় বোঝানোর কথা এসেছে। আনাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, একদিন আমরা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে মসজিদে ছিলাম। এ সময় এক বেদুইন মসজিদে এসে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা শুরু করে। রাসুল (সা.)-এর সাহাবিরা বলল, থামো, থামো। তখন রাসুল (সা.) বললেন, তাকে প্রস্রাব করতে বাধা দিয়ো না, তাকে তার অবস্থায় ছেড়ে দাও। তাই সাহাবিরা তাকে ছেড়ে দিল। সে প্রস্রাব করা শেষ করলে রাসুল (সা.) তাকে ডেকে বললেন, এই মসজিদে প্রস্রাব ও অপবিত্রতার কাজ করা যাবে না; বরং এটা শুধু আল্লাহর জিকর, সালাত ও কোরআন পাঠের জন্য। বর্ণনাকারী বলেছেন, অথবা এমন কিছু কথা বলেছেন। অতঃপর রাসুল (সা.) এক ব্যক্তিকে এক বালতি পানি এনে (প্রস্রাবের ওপর) ঢেলে দিতে বললেন। (মুসলিম, হাদিস : ২৮৫)
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.